অভিনেত্রী শবনম । বাংলাদেশী চলচ্চিত্র অভিনেত্রী

পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের একসময়কার জনপ্রিয় অভিনেত্রী শবনম। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের প্রায় শুরু থেকেই তিনি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। অবশ্য পরবর্তীতে তিনি উর্দু চলচ্চিত্রে সফলতা লাভ করেন এবং পাকিস্তানের ছবিতে অভিনয় করেন। আশির দশকের শেষভাগে তিনি পুনরায় বাংলা চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে শুরু করেন। কাজী হায়াৎ পরিচালিত আম্মাজান চলচ্চিত্রে আম্মা চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি সুখ্যাতি অর্জন করেন।

অভিনেত্রী শবনম । বাংলাদেশী চলচ্চিত্র অভিনেত্রী

পারিবারিক জীবন

অভিনেত্রী শবনমের জন্ম ১৯৪৬ সালের ১৭ আগস্ট। তার বাবা ননী বসাক ছিলেন ঢাকার খ্যাতনামা ফুটবল রেফারী। ব্যক্তিগত জীবনে শবনম ১৯৬৫ সালের ২১ ডিসেম্বর তারিখে বিয়ে করেন সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক রবীন ঘোষকে। ২০১৬ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারী তারিখে গুলশানের নিজ বাসভবনে বার্ধ্যক্যজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন রবীন ঘোষ। তাদের সংসারে একটি পুত্র সন্তান রয়েছে, নাম রনি ঘোষ। এছাড়া শবনমের বড় বোন নন্দিতা দাস কলকাতায় বসবাস করছেন।

শৈশবেই বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে নাচ শিখেছিলেন শবনম। একজন নৃত্যশিল্পী হিসেবে তিনি সুপরিচিতি লাভ করেন। সেখানেই একটি নৃত্যের অনুষ্ঠানে এহতেশাম তার নাচ দেখে এদেশ তোমার আমার চলচ্চিত্রের নৃত্যে অভিনয়ের সুযোগ করে দেন। তিনি আরও কিছু ছবিতে অতিরিক্ত শিল্পী হিসেবে অভিনয় করেন। কিন্তু এহতেশামের পাশাপাশি পরিচালক মুস্তাফিজের নজর কাড়তে সক্ষম হন অতিরিক্ত শিল্পী হিসেবে অভিনয় করেই।

অভিনেত্রী শবনম । বাংলাদেশী চলচ্চিত্র অভিনেত্রী

অভিনয় জীবন

মুস্তাফিজ পরিচালিত ‘হারানো দিন‘ ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে ১৯৬১ সালে নায়িকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন শবনম। এ ছবিতেই তিনি শবনম নাম ধারন করেন। এরপর শবনম উর্দু এবং বাংলা দু ধরনের চলচ্চিত্রেই অভিনয় করতে থাকেন। ১৯৬২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র চান্দায় অভিনয় করে তিনি পাকিস্তানজুড়ে খ্যাতি অর্জন করতে সক্ষম হন। এ ছবিতে অভিনয়ের জন্য তিনি পাকিস্তানের নিগার পুরষ্কারও লাভ করেন। উর্দু ছবিতে সফলতার কারণে শবনম পাকিস্তানেই স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। অবশ্য পরবর্তীতে তিনি আশি’র দশকে বাংলাদেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে শুরু করেন। পাকিস্তানের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী হিসেবে শবনম স্থায়ী আসন লাভ করেছেন।

শবনম আয়না ছবিতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন এবং ছবিটি পাকিস্তানের সিনেমা হলগুলিতে দীর্ঘদিন যাবৎ চলার রেকর্ড করে। ১৯৬০-এর দশকে কাজী রিজভানী’র পরিচালনায় ওয়াহিদ মুরাদের বিপরীতে লাদলা ছবির সোচা থা পিয়ার না করেংগে গানটি অত্যন্ত জনপ্রিয়তা পায় এবং সেই সাথে তিনিও সকলের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় হন।

অভিনেত্রী শবনম । বাংলাদেশী চলচ্চিত্র অভিনেত্রী

 

উর্দু চলচ্চিত্রে

তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তানের বাংলা চলচ্চিত্র-সহ উর্দু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন এবং সর্বস্তরের দর্শকদের বিপুল ভালোবাসায় ধন্য ও শিক্ত হয়েছেন শবনম, যা ঐ সময়ের সিনেমা হলগুলোতে তার অভিনীত ছবিগুলোই এর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। শবনম-ওয়াহিদ মুরাদ, শবনম-নাদিম জুটি বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করে। পরবর্তীকালে পাকিস্তানে বসবাস করে পাঞ্জাবী চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন।

পাঞ্জাবী চলচ্চিত্রে

অভিনেত্রী শবনম পাঞ্জাবী চলচ্চিত্র হিসেবে কালু, মালকা এবং রাণী বেটি রাজ করায় গী ছবিতেও অভিনয় করেছেন।

পুরস্কার ও সম্মাননা

পাকিস্তানের চলচ্চিত্র শিল্পে অসামান্য অবদান রাখায় অভিনেত্রী শবনম  সম্মানসূচক পুরস্কার হিসেবে মোট ১২বার নিগার পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া ২০১৯ সালের লাক্স স্টাইল অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে তাকে আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হয়।

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment