নির্মল দের জন্ম বাংলাদেশের ময়মনসিংহে। কলাবিদ্যায় স্নাতক নির্মল দে তিরিশের দশকে সাহিত্য চর্চার সাথে যুক্ত ছিলেন। নিউ থিয়েটার্সে বিমল রায়ের কাছে চিত্রগ্রহণের কাজও শিখেছিলেন। মতিমহল থিয়েটার্স প্রযোজিত ফণী বর্মা ও নীরেন লাহিড়ী পরিচালিত ব্যবধান (১৯৪০) এবং ফণী বর্মা পরিচালিত নিমাই সন্ন্যাস (১৯৪০) ছবিতে চিত্রগ্রাহক হিসাবে কাজ করেন। পরবর্তী সময়ে নিজের ছবি ছাড়া ন্যাশনাল ফিল্মস প্রযোজিত সৌমেন মুখোপাধ্যায় পরিচালিত সহসা (১৯৫২) ছবির চিত্রগ্রহণ করেছিলেন।
নির্মল দে
নিউ থিয়েটার্স প্রযোজিত বিমল রায় পরিচালিত প্রথম ছবি উদয়ের পথে (১৯৪৪)-এ বিমল রায়ের সাথে যুগ্ম ভাবে চিত্রনাট্য রচনার কাজও করেছিলেন। পরিচালক হিসাবে প্রথম ছবি বসু পরিবার (১৯৫২)। ছবিটি প্রযোজনা করেন মুরলীধর চট্টোপাধ্যায়। প্রথম ছবিতেই ব্যতিক্রমী শিল্পী হিসাবে পরিচিতি পান। পরের ছবি সাড়ে চুয়াত্তর (১৯৫৩) নির্মল হাসির ছবি হলেও উত্তম-সুচিত্রা জুটির যাত্রা তাঁর হাত ধরেই শুরু হয়।
সমগ্র চলচ্চিত্র জীবনে মাত্র ছটি ছবি পরিচালনা করেছেন। নিজের ছবির চিত্রনাট্য নিজেই রচনা করতেন। সত্তর দশকে তাঁর লেখা চিত্রনাট্য অবলম্বনে সমান্তরাল (১৯৭০) ছবিটি পরিচালনা করেন গুরু বাগচী। বসু পরিবার এবং চাপা ডাঙার বউ (১৯৫৪) ছবিতে চিত্রনাট্য ও পরিচালনার সাথে চিত্রগ্রহণের কাজও নিজেই করেছিলেন, সেইসাথে তারাশঙ্করের কাহিনি অবলম্বনে চাপা ডাঙার বউ ছবি প্রযোজনা করেছিলেন নির্মল সে নিজেই।
নিজের পরিচালনায় তৈরি দুজনায় (১৯৫৫) ছবিতে ছোট একটি ভূমিকায় অভিনয়ও করেন। সত্যজিৎ রায় বাংলা সিনেমার ক্ষেত্রে তাঁর পূর্ববর্তী যে সব পরিচালকের কাজের কিছুমাত্র প্রশংসা করেছেন তার অন্যতম নির্মল দে।
ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেন্দ্রীয় চরিত্রে ব্যবহার করে তিনি তৈরি করেন নির্ধারিত শিল্পীর অনুপস্থিতিতে (১৯৫৯)। ছবিটি চলচ্চিত্র সমালোচকদের প্রশংসা অর্জন করে, তাঁর শেষ ছবি বিয়ের খাতা ১৯৬০ সালে মুক্তি পায়।
চলচ্চিত্রপঞ্জি—
- ১৯৫২ বসু পরিবার,
- ১৯৫৩ সাড়ে চুয়াত্তর,
- ১৯৫৪ চাপা ডাঙার বউ,
- ১৯৫৫ দুজনায়,
- ১৯৫৯ নির্ধারিত শিল্পীর অনুপস্থিতিতে,
- ১৯৬০ বিয়ের খাতা।
আরও দেখুনঃ