নাট্যসম্রাজ্ঞী সরযূবালা দেবী ছিলেন একজন খ্যাতনামা বাঙালি চলচ্চিত্র অভিনেত্রী ও গায়িকা। সরযূবালার জন্ম ১৯১২ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারিতে বৃটিশ ভারতের অধুনা পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার আড়িয়াদহে। প্রথাগত শিক্ষা উল্লেখযোগ্য না হলেও ছোটবেলা থেকেই সংগীত শিক্ষা নিয়েছেন।
সরযূবালা দেবী
প্রথম জীবনে পিতার পরে ভীষ্মদেব চট্টোপাধ্যায় এবং নজরুল ইসলামের কাছে সংগীত শিক্ষা নিয়েছিলেন। অল্প বয়স থেকেই মঞ্চাভিনয় শুরু করেন। সহশিল্পী হিসাবে শিশির ভাদুড়ী, সুরেন্দ্রনাথ ঘোষ, দুর্গাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, অহীন্দ্র চৌধুরী, তারাসুন্দরী, কুসুমকুমারী, আশ্চর্যময়ী দাসী প্রভৃতির সাথে অভিনয় করেছেন।
সরযূবালা এমিনেন্ট থিয়েটারে কুমারসিংহ নাটকে এক ভিক্ষু বালকের চরিত্রে প্রথম অভিনয়ে গায়কের ভূমিকায় গান গেয়েছিলেন। প্রথম চলচ্চিত্রাভিনয় ম্যাডান থিয়েটার্স প্রযোজিত এবং জ্যোতিষ বন্দ্যোপাধ্যায় পরিচালিত ঋষির প্রেম (১৯৩১) ছবিতে। প্রধানত নাট্যব্যক্তিত্ব হলেও চলচ্চিত্র জীবনে মোট ২১টি ছবিতে অভিনয় করেছেন।তিনি ‘মীরাবাঈ’ নাটকে কৃষ্ণচরিত্রে অভিনয় করে বিপুল খ্যাতি অর্জন করেন।
কাজ করেছেন প্রমথেশ বড়ুয়া, ধীরেন গঙ্গোপাধ্যায়, জ্যোতিষ মুখোপাধ্যায়, শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়, দেবনারায়ণ গুপ্ত, মানু সেন প্রভৃতি পরিচালকের সাথে। অভিনীত কয়েকটি উল্লেখযোগ্য চরিত্র মুকুল (পায়ের ধূলো, ১৯৩৫), নীলা (মায়ের প্রাণ, ১৯৪১), জ্ঞান-এর স্ত্রী (শেষ নিবেদন, ১৯৪৮), দামিনী (দাসীপুর, ১৯৪৯), সীতা (কৃষ্ণাকাবেরী, ১৯৪৯), শিবনাথের স্ত্রী (পুনর্মিলন, ১৯৫৭) ইত্যাদি।
অভিনয়ের পাশাপাশি প্রমথেশ বড়ুয়া পরিচালিত মায়ের প্রাণ ছবিতে নেপথ্য সংগীতও পরিবেশন করেন। পশ্চিমবঙ্গ সরকার ১৯৮৪ সালে তাঁকে দীনবন্ধু পুরস্কার দিয়ে সম্মান জানায়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য অভিনেতা নির্মলেন্দু লাহিড়ী ছিলেন তার স্বামী। নাট্যজগতে সরবালা দেবীকে নাট্যমহাজ্ঞী হিসাবে গণ্য করা হয়।

চলচ্চিত্রপঞ্জি —
- ১৯৩১ ঋষির প্রেম:
- ১৯৩৫ পায়ের ধুলো
- ১৯৪০ শাপমুক্তি
- ১৯৪১ মায়ের প্রাণ;
- ১৯৪৫ শ্রীদুর্গা,
- ১৯৪৭ পরভৃতিকা:
- ১৯৪৮ শেষ নিবেদন;
- ১৯৪৯ কৃষ্ণাকাবেরী, দাসীপুত্র, যার যেথা ঘর
- ১৯৫৫ কালিন্দী,
- ১৯৫৭ বড়মা, পুনর্মিলন, অভিষেক, আমি বড় হবো, তমসা
- ১৯৫৮ নুপুর, শ্রীশ্রীমা
- ১৯৬৫ তাপসী;
- ১৯৭০ মঞ্জরী অপেরা
- ১৯৭৭ ফুলশয্যা।
আরও দেখুনঃ