হেডমাষ্টার চলচ্চিত্রটি রীতেন এ্যান্ড কোম্পানির প্রযোজনায়, নরেন্দ্রনাথ মিত্রর কাহিনী অবলম্বনে, অগ্রগামীর চিত্রনাটা ও পরিচালনায় নির্মিত একটি বাংলা চলচ্চিত্র।
হেডমাষ্টার চলচ্চিত্র
- প্রযোজনা — রীতেন এ্যান্ড কোম্পানি।
- কাহিনি — নরেন্দ্রনাথ মিত্র।
- চিত্রনাটা ও পরিচালনা – অগ্রগামী।
- সংগীত পরিচালনা সুধীন দাশগুপ্ত।
- গীতিকার – তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়।
- চিত্রগ্রহণ — রামানন্দ সেনগুপ্ত।
- শব্দগ্রহণ – জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়।
- শিল্প নির্দেশনা – সুধীর খান।
- সম্পাদনা —- সন্তোষ গঙ্গোপাধ্যায়।
- নেপথ্য সংগীত — সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়।
অভিনয় —
ছবি বিশ্বাস, করুণা বন্দ্যোপাধ্যায়, রঞ্জনা বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্যামল ঘোষাল, শোভা সেন, শিশির বটব্যাল, গঙ্গাপদ বসু, মণি শ্রীমানী।
কাহিনি—
ভারতের স্বাধীনতা অর্জন এবং দ্বিখণ্ডিত বাংলার মানুষের অসহায় জীবনের পটভূমিকায় এই ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্র মাস্টারমশায় কৃষ্ণপ্রসন্না (ছবি)। স্বাধীনতার আগে পূর্ববঙ্গে একটি স্কুলের হেডমাস্টার ছিলেন কৃষ্ণপ্রসন্ন। দীর্ঘ কুড়ি বছর মাস্টারি করে বহু কৃতী ছাত্র তিনি তৈরি করেছেন। ছাত্রদের তিনি জীবন দিয়ে ভালোবাসতেন, ছাত্ররাও তাকে অত্যন্ত শ্রদ্ধা করত, সংসারে অর্থাভাব থাকলেও কর্মজীবনে মানসিক শাস্তি পেয়েছিলেন।
হঠাৎ দেশভাগের ফলে কৃষ্ণপ্রসন্ন তাঁর পরিবার নিয়ে কলকাতায় চলে আসতে বাধ্য হন। সংসারে আছেন স্ত্রী লাবণ্য (করুণা) এবং কন্যা গীতা (রঞ্জনা)। কলকাতায় এসে প্রথমে দিশেহারা হলেও, অর্থের প্রয়োজনে, ছাত্র নিরুপমের (শ্যামল) সাহায্যে একটি ব্যাঙ্কে কেরানির চাকরি নিতে বাধ্য হন।
দীর্ঘকাল শিক্ষক জীবনের অভিজ্ঞতা তিনি ভুলতে পারেন নি ফলে তিনি তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও সন্তুষ্ট করতে পারেন নি। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ প্রথমে তাঁকে কেরানির থেকে নামিয়ে পিওন পদ দেয় এবং পরে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে। পরিবর্তিত সমাজব্যবস্থায় যেখানে মানুষের মূল্যবোধের অবনমন ঘটছে সেখানে একজন আদর্শ শিক্ষক তাঁর সততা, মূল্যবোধ ইত্যাদি নিয়ে জীবনযুদ্ধে পরাজিত হন।

এই কাহিনি কোনো ব্যক্তিবিশেষের জীবনসংগ্রাম কাহিনি নয়, স্বাধীনোত্তর বাংলাদেশের অবক্ষয়ী মূল্যবোধের সামগ্রিক ইতিহাসের একটি খণ্ডিত অংশ মাত্র। ছবিটি বাণিজ্যিক সাফল্য লাভ করতে না পারলেও সমালোচকদের সাথে সাথে সমাজসচেতন মানুষের অর্জন করেছিল।
আরও দেখুনঃ