সাত পাকে বাঁধা চলচ্চিত্র সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় এবং সুচিত্রা সেন অভিনীত একটি বাংলা সিনেমা । ছবিটি ১৯৬৩ সালে মুক্তি পায়। পরিচালক অজয় কর। সাত পাকে বাঁধা চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য মস্কো চলচ্চিত্র উৎসবে নায়িকা সুচিত্রা সেন “সিলভার প্রাইজ ফর বেস্ট অ্যাকট্রেস” জয় করেন। তিনিই প্রথম ভারতীয় অভিনেত্রী যিনি কোনো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কৃত হয়েছিলেন।
সাত পাকে বাঁধা চলচ্চিত্র । বাংলা চলচ্চিত্র
- প্রযোজনা -আর.ডি. বনশল।
- কাহিনি—আশুতোষ মুখোপাধ্যায়।
- চিত্রনাট্য ও অতিরিক্ত সংলাপ- নৃপেন্দ্রকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায়।
- পরিচালনা – অজয় কর
- চিত্রগ্রহণ – বিষ চক্রবর্তী।
- সংগীত পরিচালনা – মুখোপাধ্যায়।
- শিল্প নির্দেশনা – কার্তিক বসু।
- শব্দগ্রহণ – অতুল চট্টোপাধ্যায়, শ্যামসুন্দর ঘোষ।
- সম্পাদনা – বৈদ্যনাথ চট্টোপাধ্যায়।
অভিনয় –
সুচিত্রা সেন, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, পাহাড়ী সান্যাল, ছায়া দেবী, তরুণকুমার, মলিনা দেবী, প্রশান্তকুমার, সুব্রতা সেন, অমিত দে, তপতী ঘোষ, মাধুরী মুখোপাধ্যায়, মায়া রায়, পঞ্চানন ভট্টাচার্য, সন্তোষ সিংহ, অমর মল্লিক, হরেন মুখোপাধ্যায়, শৈলেন মুখোপাধ্যায়, তমাল লাহিড়ী, প্রীতি মজুমদার, আশা দেবী, গৌরী বন্দ্যোপাধ্যায়, সুতপা মজুমদার, ইরা চক্রবর্তী, গীতা দে।
কাহিনি—
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী অর্চনা (সুচিত্রা) ভালোবেসে বিয়ে করে কলেজের অধ্যাপক সুখেন্দুকে (সৌমিত্র)। তাদের বিয়েতে অর্চনার অধ্যাপক বাবা (পাহাড়ী) সন্তুষ্ট হলেও মা (ছায়া) এই বিয়েতে মোটেই সন্তুষ্ট হন নি, তাঁর ইচ্ছে ছিল বড়লোকের ছেলে ব্যবসায়ী ননীমাধবের সাথে মেয়ের বিয়ে দেন।
অন্যদিকে সুখেন্দুর পিসিমা (মলিনা) এই বিয়েতে আনন্দিত হয়ে অর্ডনার হাতে সংসারের দায়িত্ব তুলে দিয়ে তীর্থ যাত্রায় বেরিয়ে পড়েন। অর্ডনার মার অনাবশ্যক হস্তক্ষেপ অর্চনা-সুখেন্দুর বিবাহিত জীবনে অশান্তি ডেকে আনে। আত্মমর্যাদা সম্পন্ন মানুষ সুখেন্দু কারণে অকারণে শ্বশুরবাড়ির সাহায্য এবং সাহায্যের মধ্য দিয়ে তার রোজগারের প্রতি কটাক্ষ সহ্য করতে রাজি নয়, আবার না চাইলেও মাতৃস্নেহের এই অত্যাচারকে অর্চনা সহ্য করতে বাধ্য হয়, সে স্বামীকে আরও সহিষ্ণু হতে অনুরোধ জানায়। শেষ পর্যন্ত তাদের সংসার ভেঙে যায়, অর্চনাও বাপের বাড়ি ফিরে আসে।
অর্চনা একটি মফস্সল স্কুলে চাকরি নিয়ে কলকাতা ছাড়ে। স্কুলের ছাত্রী এবং অভিভাবকরা তার কাজে সহাষ্ট, স্কুল সম্পাদকের আত্মীয় নিখিলেশ অর্ডনার প্রতি আকর্ষণ বোধ করলেও অর্চনা তাকে প্রত্যাখ্যান করে। অর্চনা সুখেন্দুকে ভুলতে পারে নি।
ছোট বোন বরুণার বিয়ে উপলক্ষে অৰ্চনা কলকাতায় আসে, তার সব সময়ই সুখেন্দুর সাথে স্বল্পকালীন দাম্পত্যর কথা মনে পড়ে। শেষ পর্যন্ত নিজের সাথে যুদ্ধ করতে করতে ক্লান্ত, মায়ের মর্যাদা রক্ষা করতে গিয়ে সে নিজের ভালোবাসার পাত্রকে বিসর্জন দিয়েছে একথা তাকে অত্যন্ত পীড়া দেয়, সে তাদের পুরোনো বাড়িতে যায় সুখেন্দুর খোঁজে, জানতে পারে সুখেন্দু সেই বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে গিয়েছে। তাদের ভবিষ্যৎ মিলনের ইঙ্গিতে ছবি শেষ হয়।

পুরস্কার—
১৯৬৩ সালে বাংলা ভাষায় নির্মিত সেরা প্রাদেশিক ছবি হিসাবে ভারতের রাষ্ট্রপতির সার্টিফিকেট অফ মেরিট লাভ করে। ঐ সালেই মস্কো চলচ্চিত্র উৎসবে এই ছবির জন্য সুচিত্রা সেন সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পান।
আরও দেখুনঃ