রবীন্দ্রশঙ্কর চৌধুরীর জন্ম বেনারসে, দশ বছর বয়স পর্যন্ত বেনারসে কাটিয়ে দাদা উদয়শঙ্করের নাচের দলে যোগ দিয়ে প্যারিস যান। ঐ সময়ই দাদার দলের সাথে ইয়োরোপ/আমেরিকা ভ্রমণের সময় বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র বাজানো এবং নাচে তালিম নিতে শুরু করেন।
রবিশঙ্কর (রবীন্দ্রশঙ্কর চৌধুরী)
১৯৩৫ সালে মাইহার রাজ্যের সংগীত শিল্পী আলাউদ্দিনের ইউরোপ ভ্রমণ কালে রবিশঙ্কর তাঁর সান্নিধ্য লাভ করেন এবং তাঁর কাছে সেতার শিক্ষার সুযোগ পান। আলাউদ্দিন মাইহারে ফিরে আসার সময় রবিশঙ্করও তাঁর সাথে মাইহারে আসেন। আলাউদ্দিনের পুত্র আলী আকবর এবং কন্যা অন্নপূর্ণার সাথে একত্রে সংগীত শিক্ষা চালিয়ে যান।
১৯৪৪ সালে শিক্ষা শেষ করে বোম্বে যান এবং বোম্বেতে ভারতীয় গণনাট্য সংঘের সাথে যুক্ত হয়ে পড়েন। সংঘের সাথে যুক্ত থাকাকালীন তিনি বিভিন্ন গীতিনাট্যে সুর সংযোজন করতেন। ঐ সময়ই এইচ.এম.ভি. থেকে তাঁর প্রথম রেকর্ড প্রকাশিত হয়। ১৯৪৯-৫৬ সাল পর্যন্ত তিনি অল ইন্ডিয়া রেডিওর সংগীত পরিচালক হিসাবে কাজ করেছেন।
বাংলা চলচ্চিত্রে সংগীত পরিচালক হিসাবে তাঁর প্রথম কাজ সত্যজিৎ রায় পরিচালিত পথের পাঁচালী (১৯৫৫) ছবিতে। অপুত্রয়ী ছাড়াও তিনি সত্যজিৎ রায় পরিচালিত পরশপাথর (১৯৫৮) ছবির সংগীত পরিচালনা করেছেন। সত্যজিৎ রায় ছাড়াও কাজ করেছেন তপন সিংহ, অসিত সেন, উৎপল দত্ত, পূর্ণেন্দু পত্রী, জীবন গঙ্গোপাধ্যায়, সলিল সেন প্রভৃতি চলচ্চিত্রকারের সাথে।
মাত্র তেরোটি বাংলা ছবির সংগীত পরিচালক রবিশঙ্কর আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সেতার বাদক হিসাবেই সমধিক পরিচিত। গ্রাঁ স্ত্রী পুরস্কার জয়ী রবিশঙ্করের প্রথম আত্মজীবনী “My Music. My Life ১৯৬৮ সালে প্রকাশিত হয়। পরবর্তী কালে তাঁর দ্বিতীয় আত্মজীবনী ‘Ragamala’ ১৯৯০এ প্রকাশিত হয়েছে। বাংলায় তাঁর স্মৃতিচিত্রণ প্রকাশিত হয়েছে “রাগ ‘অনুরাগ’ নামে।
তপন সিংহ পরিচালিত কাবুলিওয়ালা (১৯৫৭) ছবির জন্য বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবে শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালকের সম্মান লাভ করেন। তিনি ভারতরত্ন সম্মানেও ভূষিত হয়েছিলেন।

চলচ্চিত্রপঞ্জি —
- ১৯৫৫ পথের পাঁচালী:
- ১৯৫৬ অপরাজিত
- ১৯৫৭ কাবুলিওয়ালা
- ১৯৫৮ পরশপাথর, কালামাটি, নাগিনী কন্যার কাহিনী;
- ১৯৫৯ অপুর সংসার:
- ১৯৬১ স্বয়ংসিদ্ধা, মেঘ, সন্ধ্যারাগ;
- ১৯৬২ ঢেউ এর পরে ঢেউ
- ১৯৬৫ ঘুম ভাঙার গান:
- ১৯৬৬ স্বপ্ন নিয়ে।
আরও দেখুনঃ