মুক্তি চলচ্চিত্র
মুক্তি চলচ্চিত্র । বাংলা চলচ্চিত্র
- প্রযোজনা — নিউ থিয়েটার্স।
- কাহিনি ও সংলাপ – সজনীকান্ত দাস, প্রমথেশচন্দ্র বড়ুয়া, ফণী মজুমদার।
- পরিচালনা – প্রমথেশচন্দ্র বড়ুয়া।
- চিত্রগ্রহণ – বিমল রায়।
- সংগীত পরিচালনা— পঙ্কজকুমার মল্লিক।
- শব্দগ্রহণ—অতুল চট্টোপাধ্যায়।
- সম্পাদনা—কালী রাহা।
- গীতিকার— রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, অজয় ভট্টাচার্য, সজনীকান্ত দাস।
অভিনয় –
প্রমথেশচন্দ্র বড়ুয়া, কানন দেবী, – মেনকা দেবী, পঙ্কজকুমার মল্লিক, অমর মল্লিক, ইন্দু মুখোপাধ্যায়, শৈলেন চৌধুরী, দেববালা, অহি সান্যাল, কনকনারায়ণ ভূপ, বিভূতি চক্রবর্তী, কাশী চৌধুরী, যতীন দে, শরদেব রায়, নবাব খাঁ
নেপথ্য সংগীত —
পঙ্কজকুমার মল্লিক, কানন দেবী।
কাহিনি—
প্রশান্ত (প্রমথেশ) একজন শিল্পী। লোকজনের সাথে অযথা গল্পগুজব করার চাইতে স্টুডিওতে বসে ছবি আঁকাতেই তার আনন্দ। প্রশান্তর স্ত্রী চিত্রা (কানন) বিদুষী এবং রূপসি, তার উপর শহরের বিখ্যাত ধনী মিঃ মল্লিকের (শৈলেন) কন্যা ফলে শহরের অনেক যুবকই চিত্রাকে বিয়ে করতে চেয়েছিল।
বিশেষ করে বিলেত ফেরত পার বিপুল (ইন্দু) ছিল প্রশান্তর মূল প্রতিদ্বন্দ্বী। প্রশান্তর সাথে চিত্রার বিয়েতে বিপুল প্রাথমিক ভাবে হতাশ হলেও সে এবং তার পরিবারের লোকেরা হাল ছাড়তে রাজি নয়। চিত্রা স্বামীর সামাজিক মেলামেশায় অনীহা দেখে কষ্ট পেলেও স্বামীর প্রতি তার আস্থা অটুট।
প্রশান্তর সাথে তার মডেলের অবৈধ সম্পর্ক নিয়ে বিপুল ও তার পরিবারের লোকেরা কুৎসা রটনা করে। মিঃ মল্লিক একদিন বিপুল সহ কিছু বন্ধুবান্ধব এবং চিত্রাকে নিয়ে প্রশান্তর স্টুডিওতে যান এবং অর্ধনগ্ন মডেলকে দেখে প্রশান্তকে প্রচণ্ড তিরস্কার করেন, চিত্রাও স্বামীর কাছে মুক্তি প্রার্থনা করে। চিত্রার ব্যবহারে মর্মাহত প্রশান্ত তাকে মুক্তি দিয়ে চলে যায়।
কলকাতা থেকে দূরে আসামের গারো পাহাড় সংলগ্ন জঙ্গলের পাশে একটি সরাইখানায় প্রশান্ত আশ্রয় নেয়। সরাইটির মালিক পাহাড়ী (পঙ্কজ) ও তার সঙ্গিনী ঝরণা (মেনকা)। পাহাড়ীর সাথে প্রশান্তর হৃদ্যতা তৈরি হলেও প্রশান্তর প্রতি ঝরণার ব্যবহার তাকে সন্দিহান করে তোলে। ইতিমধ্যে কুলিদের সর্দারের (অমর) সাথে প্রশান্তর বিরোধ বেধে যায়।
প্রশান্ত কলকাতা ছেড়ে আসার পর বিপুলের সাথে চিত্রার বিয়ে হয়। নব পরিণীত দম্পতি আত্মীয় স্বজন সহযোগে গারো পাহাড়ে শিকারে আসে। সর্দার এক সময় প্রশান্তর কাছে চিত্রার ছবি দেখেছিল এবং চিত্রা সংক্রান্ত একটি অপমানজনক মন্তব্যের কারণে প্রশান্তর কাছে মার খায়। এখন সুযোগ বুঝে সর্দার চিত্রাকে অপহরণ করে।
মিঃ মল্লিক ও বিপুল অপহরণের জন্য প্রশান্তকে দায়ী করে। প্রশান্ত সর্দারের উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে চিত্রাকে মুক্ত করার জন্য সর্দারের আস্তানায় যায়, সর্দারের ছুরির আঘাতে প্রশান্ত এবং প্রশান্তর ছোঁড়া গুলিতে সর্দার আহত হয়। প্রশান্ত চেষ্টা করলে হয়তো নিজেকে বাঁচাতে পারত, কিন্তু আন্তরিক ভাবেই সে চিত্রাকে মুক্তি দিতে চেয়েছিল। সর্দার ও প্রশান্তর মৃত্যু হয়। চিত্রা মুক্তি পায়। পঙ্কজ মল্লিকের লেখা থেকে জানা যায় এই ছবির ‘মুক্তি’ নাম কবিগুরুর দেওয়া।
ছবিটি অভূতপূর্ব জনসমাদর লাভ করে। সংগীতাংশও অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়েছিল। এই ছবির সূত্রে প্রমথেশ বড়ুয়া এবং কানন দেবী স্টার-এর মর্যাদা লাভ করেন।
প্রকাশনা বিভাব পত্রিকার ৬৩ তম বিশেষ সংখ্যায় ছবিটির চিত্রনাট্য প্রকাশিত হয়।
আরও দেখুনঃ