নীতিন বসু

নীতিন বসুর জন্ম কলকাতায়। কুন্তলীন প্রেস এবং টকিং মেশিন হল এর মালিক হেমেন্দ্রমোহন বোস-এর পুত্র। ছোটবেলায় বাবার কাছ থেকে একটি মুভি ক্যামেরা পেয়েছিলেন। নিজেই ছবি ডেভেলপ করতেন। ১৯২১ সালে এই ক্যামেরার সাহায্যে কয়েকটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেছিলেন যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল পুরীর রথযাত্রা’ এবং ‘ত্রিপুরার হাতি শিকার।

 

নীতিন বসু । বাংলা চলচ্চিত্রের অভিধান

 

নীতিন বসু 

নির্বাক যুগেই চিত্রগ্রাহক হিসাবে চলচ্চিত্রে যোগদান। ইন্ডিয়ান কিনেমা আর্টস-এর প্রযোজনায় পুনর্জন্ম (১৯২৭) ছবির চিত্রগ্রহণ করেছিলেন। ছবিটি পরিচালনা করেন জয়গোপাল পিল্লে। ১৯২৯ সালে ইষ্টার্ন ফিল্ম সিন্ডিকেট প্রযোজিত বিচারক এবং দেবদাস ছবি দুটির চিত্রগ্রহণ করেন।

ছবি দুটি পরিচালনা করেন যথাক্রমে শিশিরকুমার ভাদুড়ী এবং নরেশচন্দ্র মিত্র। ১৯৩০ সালে বিখ্যাত ইম্প্রেসারিও হরেন ঘোষ পরিচালিত বুকের বোঝা (নির্বাক) ছবির চিত্রগ্রাহক ছিলেন। নির্বাক যুগে ধীরেন্দ্রনাথ সরকারের ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ক্রাফট প্রযোজিত চাষার মেয়ে (১৯৩১) এবং চোরকাঁটা (১৯৩১) ছবি দুটিরও চিত্রগ্রহণ করেছিলেন।

 

নীতিন বসু । বাংলা চলচ্চিত্রের অভিধান

 

১৯৩১ সালে নিউ থিয়েটার্স প্রতিষ্ঠার সময় থেকে বেশ কয়েক বছর ক্যামেরা বিভাগের দায়িত্ব ছিল তাঁর উপর। এন টি প্রযোজিত প্রথম ১২টি ছবির চিত্রগ্রহণও তিনিই করে ছিলেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল দেনাপাওনা (১৯৩১), চণ্ডীদাস (১৯৩২), পল্লী সমাজ (১৯৩২), পুরাণ ভকত্ (১৯৩৩), মহুয়া (১৯৩৪), রূপলেখা (১৯৩৪) ইত্যাদি।

১৯৩৪ সালে নিউ থিয়েটার্স প্রযোজিত উর্দু ছবি ডাকু মনসুর ছবিতে চিত্রগ্রহণের পাশাপাশি পরিচালক হিসাবে কাজ করেন। এই ছবিটি প্রদর্শনের ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িকতার কারণে সরকার থেকে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। ১৯৩৫ সালে তাঁর পরিচালনায় দ্বিভাষিক ছবি ভাগ্যচক্র এবং ধুপছাঁওতেই প্রথম প্লেব্যাক পদ্ধতিতে গান রেকর্ড করা হয়।

 

নীতিন বসু । বাংলা চলচ্চিত্রের অভিধান

 

পরবর্তী কালে এন.টি.র. যে ছবিগুলি পরিচালনা করেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল দিদি / প্রেসিডেন্ট (১৯৩৭), দেশের মাটি /ধরতিমাতা (১৯৩৮), দুশমন/জীবনমরণ (১৯৩৮), পরিচয়/ লগন (১৯৪১) ইত্যাদি। ১৯৪১ সালে তিনি বোম্বে চলে যান এবং বোম্বে টকীজের হয়ে যে কয়েকটি হিন্দী /বাংলা বিভাবিক ছবি তৈরি করেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য নৌকাডুবি / মিলন (১৯৪৬) এবং মশাল/সমর (১৯৫০)।

তাঁর শেষ ছবি মুক্তি পায় ১৯৭২ সালে। ১৯৭৭ সালে ভারত সরকার তাঁকে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার দিয়ে সম্মান জানায়।

 

 

চলচ্চিত্রপঞ্জি—
  • ১৯২৭ পুনর্জন্ম,
  • ১৯২৮ দেবদাস,
  • ১৯২৯ বিচারক:
  • ১৯৩০ বুকের বোঝা।
  • ১৯৩১ চোরকাঁটা, চাষার মেয়ে, দেনাপাওনা
  • ১৯৩২ নটীর পূজা, পুনর্জন্ম, চিরকুমার সভা, পল্লী সমাজ, চণ্ডীদাস,
  • ১৯৩৩ কপালকুণ্ডলা, মীরাবাই,
  • ১৯৩৪ মহুয়া, রূপলেখা:
  • ১৯৩৫ দেবদাস, ভাগ্যচক্র
  • ১৯৩৭ দিদি,
  • ১৯৩৮ দেশের মাটি,
  • ১৯৩৯ জীবনমরণ
  • ১৯৪১ পরিচয়
  • ১৯৪৩ কাশীনাথ, বিচার:
  • ১৯৪৭ নৌকাডুবি,
  • ১৯৪৮ দৃষ্টিদান
  • ১৯৫০ সমর,
  • ১৯৫৭ মাধবীর জন্য
  • ১৯৫৮ যোগাযোগ।

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment