নিরঞ্জন পাল: বাংলা চলচ্চিত্র বা বাংলা সিনেমা ১৮৯০ সালে ভারতের কলকাতায় বায়োস্কোপ নামে শুরু হয়েছিল। ১৮৯৮ খ্রিষ্টাব্দের কলকাতায় বাঙালিদের মধ্যে প্রথম বায়োস্কোপ কোম্পানি গঠন করেন তৎকালীন ঢাকার বগজুরী গ্রামের হীরালাল সেন (১৮৬৬-১৯১৭)। তার প্রতিষ্ঠিত কোম্পানির নাম রয়্যাল বায়োস্কোপ কোম্পানি। তিনিই ছিলেন বাংলার প্রথম চলচ্চিত্র নির্মাতা।
নিরঞ্জন পাল
জন্ম কলকাতায়, পিতা স্বনামধন্য জাতীয়তাবাদী নেতা বিপিনচন্দ্র পাল। প্রাথমিক শিক্ষা কলকাতায়, যৌবনের প্রারম্ভে স্বাধীনতা আন্দোলনের বিপ্লবী মতাদর্শে দীক্ষিত হন। ১৯০৮ সালে তাঁকে বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। লন্ডনে থাকাকালীন বিভিন্ন নাট্য সম্প্রদায়ের জন্য ইংরাজিতে নাটক লেখেন যার অনেকগুলিই ঐ সময় মঞ্চস্থ হয়েছিল।
১৯২৭ সালে হিমাংশু রায়ের সাথে পরিচয় হয় এবং নির্বাক ছবি সিরাজ (১৯২৮)-এর চিত্রনাট্য রচনা করেন। পরবর্তী কালে তাঁর লেখা নাটক মধু বসু ও তাঁর সম্প্রদায় কলকাতায় মঞ্চস্থ করে।
অরোরা ফিল্ম কর্পোরেশনের নিউজ রীল তৈরির (১৯৩৮-৪২) সাথেও যুক্ত ছিলেন। তার আগেই অরোরার হয়ে তৈরি করেন নির্বাক ছবি পূজারী (১৯৩১), এই ছবির চিত্রনাট্যও তাঁর নিজের লেখা।
মাঝখানে কিছুদিন বোম্বে টকীজের সাথেও (১৯৩১-৩৭) যুক্ত ছিলেন। বোম্বে টকীজের প্রধান চিত্রনাট্যকার হিসাবে লেখা তাঁর চিত্রনাট্য অবলম্বনে তৈরি হয় অদ্ভুত কন্যা (১৯৩৬) এবং জীবন নাইয়া (১৯৩৬)।
মাঝখানে ইন্ডিয়ান কিনেমা আর্টস এর হয়ে তৈরি করেন পরদেশিয়া (১৯৩১)। পরবর্তী কালে অরোরা প্রযোজিত শিশুদের জন্য স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবি হাতেখড়ি (১৯৩৯), দ্বিতীয় পাঠ (১৯৪০), বোধোদয় (১৯৫১) এবং ছুটির দিনে (১৯৫১) ছবিগুলি সমালোচকদের মুগ্ধ করেছিল। ইন্দ্র মুভিটোনের জন্য তৈরি করেন চিত্ত (১৯৪১) রাসপূর্ণিমা (১৯৪১) এবং ব্রাহ্মণ কন্যা (১৯৪১)।
নিজের ছবির চিত্রনাট্য নিজেই রচনা করতেন। ছোটদের জন্য তৈরি ছুটির দিনে (১৯৫১) ছবিটি কলকাতার চিড়িয়াখানা ভ্রমণের ওপর তৈরি হয়েছিল। ছোটদের উপযোগী। ছবিগুলি গমও তাঁর নিজের লেখা।
চলচ্চিত্রপঞ্জি (বাংলা) –
- পূজাবী (নির্বাক, ১৯৩১),
- পরদেশিয়া (নির্বাক, ১৯৩১),
- হাতেখড়ি (১৯৩৯),
- শুকতারা (১৯৪০),
- দ্বিতীয় পাঠ (১৯৪০),
- চিঠি (১৯৪১),
- রাসপূর্ণিমা (১৯৪১),
- ব্রাহ্মণকন্যা (১৯৪১),
- বোধোদয় (১৯৫১),
- ছুটির দিনে (১৯৫১)।
আরও দেখুনঃ