আমাদের আজকের আলোচনার বিষয়ঃ আই সার্ভ দ্য কিং অব ইংল্যান্ড ।
আই সার্ভ দ্য কিং অব ইংল্যান্ড
আই সার্ভ দ্য কিং অব ইংল্যান্ড
চলচ্চিত্রের কাহিনী সংক্ষেপ :
এক হোটেলবয়ের হোটেল মালিক হয়ে ওঠার কাহিনী।
দেশ : চেক রিপাবলিক
পরিচালক : জিরি মেনজেল
লেখক : বহুমিল হারাবল-এর উপন্যাস আই সার্ভ দ্য কিং অব ইংল্যান্ড-এর চিত্রনাট্যকার জিরি মেনজেল ।
রিলিজ ডেট : ২৯ আগস্ট ২০০৮
মুখ্য চরিত্র : জুলিয়া জেনটেসচ
ওল্ডরিক কাইসার
মিলান লাসিকা
ম্যারিয়ান লেবুদা
আই সার্চ না কিং অব ইংল্যান্ড
স্লামডগ মিলিয়নেয়ার চলচ্চিত্রে ব্রিটিশ পরিচালক ড্যানি বয়েল দেখিয়েছেন মুম্বাইয়ের বস্তির ছেলে জামাল কিভাবে তার জীবনের অর্জিত অভিজ্ঞতাকে পুঁজি করে দশ-বারোটি প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিয়ে দু’রাতের মধ্যে দুই কোটি রুপির মালিক বনে গেল। কিন্তু ড্যানি বয়েল যেটি দেখাননি সেটি হলো এই রাতারাতি কোটিপতি বনে যাওয়া জামালের জীবনে এ বিপুল অর্থ কি বয়ে আনলো।
আশীর্বাদ না অভিশাপ। সৌভাগ্য না দুর্ভাগ্য! সম্পদ না বিপদ! এ প্রশ্নের উত্তর ড্যানি বয়েলের কাছ থেকে না পাওয়া গেলেও ইউরোপ মহাদেশের ছোট্ট দেশ চেক রিপাবলিকের পরিচালক জিরি মেনজেল সে প্রশ্নের উত্তর জানিয়েছেন তার চলচ্চিত্র ‘আই সার্ভ দ্য কিং অব ইংল্যান্ড’-এ।
বোত্তমি হারাবলের মূল উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্র আই সার্ভ দ্য কিং অব ইংল্যান্ড অতিসম্প্রতি প্রদর্শিত হলো ঢাকা আলিয়া ফ্রন্সেস অডিটোরিয়ামে যেখানে দেখা যায় জন ডিটেই নামের এক যুবকের কোটিপতি হয়ে ওঠা এবং তার পরিণতির কথা।
পরিণত বয়সে জীবনের হিসাব-নিকাশ কে কিভাবে মিলাবে এটা বলা একটু কঠিন। তবু পাহাড়ের নির্জন খাদে বসে ছোট্ট কাঠের ঘর বানাতে বানাতে বৃদ্ধ ডিটেই এর মনে পড়ে সেই ফেলে আসা শৈশবের কথা, চঞ্চল কৈশোরের কথা, বাঁধভাঙা স্রোতে গা ভাসানো যৌবনের কথা। যে বয়সে আর দশজন যুবক কলেজের ক্যাম্পাসে পা বাড়ায় ঠিক সেই বয়সে ডিটেই স্টেশনে ফেরি করে গরম গরম রুটি সেঁকে মাখন মিশিয়ে নিত্যনতুন চলমান পথযাত্রীদের কাছে বিক্রি করে।
চলচ্চিত্রের শুরুতে দেখা যায় ট্রেনের এক যাত্রী মিঃ ওয়ালডেন রুটির অর্ডার দিয়ে ডিটেই- [-এর কাছ থেকে রুটি পেয়েছে কিন্তু যত বড় নোট দিয়েছে তা ভাঙাতে ডিটেই তার চার পাঁচটি পকেট তন্ন তন্ন করে খুঁজে যখন হিসাব মিলিয়েছে ততক্ষণে ট্রেন স্টেশন ছেড়ে ছুটে চলছে। সাথে সাথে মি. ওয়ালডেনকে তার প্রাপ্য ফিরিয়ে দিতে ডিটেই-এর ভৌ দৌড়। ট্রেন ছুটছে, মি. ওয়ালডেন ঝুঁকে হাত বাড়িয়েছে আর হাতে টাকাটা ধরিয়ে দিতে ডিটেই মরি কি পড়ি দৌড়াচ্ছে। কিন্তু ডিটেই কি আর
ট্রেনের সাথে দৌঁড়ে পারে। এক সময় ফিরিয়ে দিতে না পারার দুঃখে ডিটে দাঁড়িয়ে যায়। এই সময় একটা চমৎকার শট দর্শকদের উপহার দিয়েছেন। পরিচালক জিবি মেনজেল। অনেক কান্নাকাটি করে বাবার বাড়ি থেকে বিদায় নিয়ে গাড়িতে গিয়ে যখন মেয়ে তার স্বামীর পাশে বসা মাত্র মনে মুখে আনন্দের উদ্ভাস ভেসে ওঠে ঠিক তেমনি দুরকম মুখাবয়ব ফুটে ওঠে ডিটেই- এর মুখে।
টাকা ফেরত দিতে না পারার কষ্ট আবার প্যাসেঞ্জার মি. ওয়ালডেন চলে গেছে ফলে পাঁচশো টাকার নোটটা আমার ভাবার আনন্দ। এ সময় দর্শক শুনতে পায় ডিটেই বলছে, আমার স্বপ্ন আমি একদিন কোটিপতি হবো এবং কোটিপতি হয়ে একটা হোটেল বানাব, যে হোটেলের নাম হবে ‘হোটেলই ডিটেই’।
হোটেলই ডিটেই আদৌ হোক বা না হোক গোল্ডেন প্যারাগুয়ে নামে এক হোটেলে হোটেল হিসেবে চাকরি নেয় ডিটেই। গোল্ডেন প্যারাগুয়ে হোটেলের ম্যানেজার দুই কারণে ডিটেই-এর ঘাড়ের উপর থাবড়ায়। প্রথম থাবড়ানোর কারণ কেন তুই চোখ বুজে কান বন্ধ রেখে শুধু কাস্টমারের অর্ডার সাপ্লাই দিচ্ছিস না বলে।
দ্বিতীয় থাবড়ানোর কারণ, কেন তুই চোখ খুলে কানে শুনে কাস্টমারের অর্ডার নিচ্ছিস না বলে। ম্যানেজারের ঠিক কোন অর্ডারটা ভাবে ভেবে যখন ডিটেই দ্বিধান্বিত তখন তার ঘাড়ের উপর ম্যানেজারের আবার থাবা থাবায় থাবায় যখন ডিটেই-এর চোখেমুখে অন্ধকার তখন দেহমনে রঙের বৃষ্টিতে ভিজিয়ে দিয়ে এগিয়ে আসে চেকতনয়া প্যারাডাইস।
প্যারাডাইসকে পেয়ে যখন ডিটেই একটা ধরে বাঁচার অবলম্বন খুঁজে পেয়েছে সে সময়ই এক বিকালে হোটেলে খেতে আসে সেই ট্রেনযাত্রী মি. ওয়ালডেন। ওয়ালডেনের ঘরে যেয়ে ডিটেই-এর চক্ষু চড়কগাছ। সারা ঘরের মেঝেতে কার্পেটের পরিবর্তে পরে ধরে টাকা পাতানো।
মি. ওয়ালডেন ডিটেইকে বলে, সোনার চান্দু তুমি সেদিন একটা নোট ফেরত দিতে পারোনি বলে ভেবেছো আমি পথের ফকির হয়ে গেছি। না না, ভেবো না এই যে মেঝেতে বিছানো এত টাকাই আমার সব টাকা। আরে এ তো আমার মাত্র এক সপ্তাহের আয়।। পুরো টাকার পরিমাণ গুনতে দু-দশটা চার্টার্ড একাউটটেন্ট হাতে পায়ে ঘেমে গোসল করে উঠবে।
আমি জানি কোন সময় কোন জিনিস কিনে কোথায় বিক্রি করতে হয়। আরে চান্দু, তোমার হাতে যখন টাকা থাকবে তখন পৃথিবীর সব সুখ তোমার দু’পায়ের তলায়, ঐ যে তোমার পা, তার তলায় লুটোপুটি খাবে বুঝেছো। তুমি তো স্টেশনে বসে কয়েন শুনে শুনে সময় পার করে দিলে।
তোমাকে ফেরত দেয়ার কৌশল জানতে হবে। তবেই না নোট, আস্ত আস্ত নোট তোমার হাতে ফিরবে। এখন যাও, আমি টাকার বালিশ বানিয়ে কোলে মাথায় দিয়ে ঘুমিয়ে পড়বো। যদি পার স্ট্যাম্প জোগার কর স্ট্যাম্প ছোট পকেটে লুকিয়ে রাখতে অসুবিধে নেই কিন্তু একেকটা স্ট্যাম্প বিক্রি করে তুমি আজ যে হোটেলের বয় সেই হোটেলের মালিক বনে যেতে পারো। বুঝলে, এবার যাও আমি টাকার বালিশে ঘুমাবো।
ঘুমায় ডিটেইও। কিন্তু তার চোখে স্বপ্ন কোটিপতি হওয়ার। কোটিপতি হওয়ার পথটাই জানা নেই। প্যারাডাইসের সাথে অত্যধিক আন্তরিক সম্পর্ক হয়ে যাওয়ায় গোল্ডেন প্যারাগুয়ে থেকে ডিটেই এর চাকরি যায়। পরে চাকরি জোটে হোটেলে টিকোতাতে।
হোটেল মালিক টিকাতার নামানুসারে হোটেলের নাম। এ হোটেলের বেশিরভাগ কাস্টমার কোটিপতি এবং বয়সে বৃদ্ধ। সংসারে বার্ধক্যের কারণে অবজ্ঞার পাত্র হবে না বলে সারা জনমের অর্জিত সম্পদের সুফল হিসেবে এই হোটেলের সুখ-সুবিধা ভোগ।
বৃদ্ধ কোটিপতিরা সকাল সকাল আসবে, নাস্তা করবে। সুন্দর সুন্দর রমণী নানাভাবে দুষ্টমি করে তাদের ব্যস্ত রাখবে। সুইমিংপুলে লাফিয়ে গোসল করবে আবার মাঠে ফড়িং-এর মতো ছুটবে। দুপুরের লাঞ্চ আর রাতের ডিনার সেরে তবেই তারা বাড়ি ফিরবে। এখানে একটা বড় অংকের বকশিশ জমে ডিটেই-এর। হোটেল টিকাতার পর নতুন চাকরি জোটে হোটেল প্যারিসে।
হোটেল প্যারিসের চিহ্ন ওয়েটার স্কিরিডেনেক-এর সাথে ডিটেই-এর সম্পর্ক বড় অদ্ভুদ। একজন কাস্টমারকে দেখে ডিটেই হয়তো ভাবছে তার জুস আর ফ্রেঞ্চফ্রাই লাগবে কিন্তু স্কিরিডেনেক বলছে না তার লাগবে উটের মাংস রোস্ট এবং উইস্কি উইথ লেমন।
দেখা যায় স্কিরিভেনের যা বলেছে কাস্টমারেরও তাই চাই। কথা না বলে কোন কাস্টমারের কি দরকার এটা কিভাবে বোঝেন বললে লম্বা চওড়া স্কিরিভেনেক বুক উচিয়ে বলে, আই সার্ভড দ্য কিং অব ইংল্যান্ড (আমি ইংল্যান্ডের রাজাকে খাইয়েছি)। তবে দু-একটি টিপস ডিটেইকে দিয়ে দেয় স্কিরিডেনেক। প্রথমে দেখতে হবে কাস্টমার ঠিকা কি রকম। ক্ষুধার্ত হয়ে খেতে এসেছে নাকি সৌখিন রুচিতে খেতে এসেছে।
কি পরিমাণ অর্থ আছে এবং কতটুকু পরিমাণ খরচা করতে পারে প্রভৃতি। এখানে একটা দৃশ্যে পরিচালক জিরি মেলজেল দেখিয়েছেন কেন উঁচু ডিবিতে জল দাঁড়ায় না, অহংকারী মানুষ কিভাবে তার প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত হয়। প্যারিস হোটেলে ইথিওপিয়ার রাজা বিভিন্ন দেশের রাজন্যবর্গের জন্য খাওয়ার দাওয়াত দিয়েছে।
খাবার এত চমৎকার হয়েছে যে, রাজা চিহ্ন ওয়েটারকে পুরস্কৃত করবে। কিন্তু রাজা উচ্চতায় যত ছোট চিহ্ন ওয়েটার লম্বায় তত বড়। রাজা মেডেল ফিতা ধরে আপ্রাণ চেষ্টা করে লম্বা হয়ে চিফ ওয়েটারের গলায় পরিয়ে দিবে কিন্তু লম্বায় হাতে পায় না আবার চিফ ওয়েটার একটু নিচুও হয় না। অপরদিকে ডিটেই এমনিতেই তুলনামূলক ছোট আবার হয়ও একটু নিচু। ফলে রাজা মেডেল পরিয়ে দেয় ডিটেই এর গলায়। ফলে তখন থেকে ডিটেইও বলতে পারে, আই সার্ভড দ্য এমপেয়র অব ইথিওপিয়া।
গর্বের কথা গর্ব করে বলতে পারলেও ডিটেই-এর চাকরি যায় হোটেল প্যারিস থেকে। সে ফিরে আসে হোটেল টিকোতাতে। এখানে একদল দস্যুর হাত থেকে বাঁচায় জার্মান মেয়ে লিজাকে ডিটেই। ভালোবাসা তৈরি হয় কিন্তু জার্মান হিসেবে তাদের গর্বের ব্লুরাডে যার তার প্রবেশ নেই।
লিজার বিশ্বাস জার্মান ব্লুব্লাড নেতৃত্বের প্রতীক। ক্রসকালচারের ফলে ভবিষ্যৎ জার্মান প্রজন্ম নেতৃত্বশূন্য বা বিপর্যস্ত হতে পারে। কিন্তু ডিটেই-এর উচ্চারণে মাঝে মধ্যে জার্মান আঞ্চলিকতার টানের সূত্র ধরে লিজা নিশ্চিত হয় ডিটেই-এর দাদু ছিলেন জার্মান। ফলে তাদের মধ্যে ধর্মীয় মতে বিবাহ হয় এবং লিজা নিশ্চিত করে হোটেল ডিটেই সে করবেই।
নিন্দিত-নন্দিত অ্যাডলফ হিটলার কিভাবে পুরো জার্মানবাসীকে উন্মাদনায় ভাসিয়েছিল সেটা বোঝাতে পরিচালক জিরি মেনজেল একটা চমৎকার দৃশ্য দেখিয়েছেন দর্শকদের। রাতের বিছানায় লিজা যখন স্বামী ডিটেইকে দিয়ে সমুদ্রে ঢেউ তোলাচ্ছে তখন লিজারূপী সমুদ্রের দৃষ্টি ঐ দূর আকাশে চাঁদের পানে। এই চাঁদ আর কেউ না, এই চাঁদ ঘরের দেয়ালে বাঁধানো অ্যাডলফ হিটলারের ছবি। ধ্যানে-জ্ঞানে-মননে তখন অ্যাডলফ হিটলার
হিটলারের নির্দেশে আরো অনেকের মতো লিজাও এক সময় জার্মান সৈন্যদলে যোগ দেয় এবং যুদ্ধে যায়। বিদায়বেলায় রেলস্টেশনে দাঁড়ানো অসহায় ডিটেই দেখে তার প্রাণেশ্বরী লিজা চলে যাচ্ছে ট্রেনে করে। ডিটেই- এর চোখ বেয়ে যখন জল গড়াবে ঠিক তখন ডিটেই-এর চোখ যেয়ে পড়লো মালগাড়ির দিকে।
যেখানে গরু-ছাগলের মতো গাদিয়ে গাদিয়ে ভরা হয়েছে ইহুদিদের যাদের অনেকে তাদের হোটেল টিকোতার নিয়মিত কাস্টমার । কোটিপতি কাস্টমারদের এই পরিণতি! কিন্তু খাবার নিয়ে ডিটেই আবার দৌড় লাগায়। কিন্তু ততক্ষণে ট্রেন ছেড়ে দিয়েছে। হাত বাড়িয়ে ক্ষুধার্ত মানুষ, খাবার নিয়ে দৌড়াচ্ছে ডিটেই তবু কেউ কাউকে ছুতে পারে না। ভালো করতে চাইলেই ভালো করা যায় না।
ভালো লাগে না লিজার যুদ্ধ। সে রণাঙ্গন থেকে চলে আসে। সাথে নিয়ে আসে ইহুদি পরিবার থেকে লুট করা স্ট্যাম্প। একটা স্ট্যাম্প বিক্রি করলেই। হোটেল ডিটেই। জার্মানরা আসায় হোটেল মালিক টিকোতাকে অনেক আগেই সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মান ও তার মিত্রশক্তিরা পরাজিত হলে জার্মান অধিকৃত প্রতিষ্ঠানে আক্রমণ চালানো হয়। দাউ দাউ করে জ্বলছে হোটেল টিকোতা। অসুস্থ জার্মানদের মোটামুটি নিরাপদ জায়গায় রেখে লিজা দৌড় লাগায় তার ঘরে।
যাওয়ার আগে হঠাৎ একবার তাকায় স্বামী ডিটেই- এর দিকে। চোখের ভাষায় স্পষ্ট এই ঝুঁকি স্বামী ডিটেই-এর জন্য। লিজা ভিতরে যায় কিন্তু ফেরে না। স্বামী ডিটেই যেয়ে দেখে ছাদ ভেঙে মাথায় পড়ায় স্ত্রী লিজা মৃত কিন্তু হাতে ধরা স্ট্যাম্পের বাক্স। যে বাক্সের মধ্যে লুকিয়ে আছে স্বামীর জন্য বানানোর স্বপ্নের হোটেল ডিটেই।
হোটেল ডিটেই অবশেষে হয় স্ট্যাম্প বিক্রি করে। এত টাকা রাখার জায়গা নেই। মি. ওয়ালডেনের মতো মেঝেতে টাকার কার্পেট না বানিয়ে দেয়ালে আঁঠা লাগিয়ে টাকার ওয়াল বানায়। কিন্তু সাপের শত্রু যেমন বেজি। তেমনি পুঁজিবাদীর শত্রু কমিউনিজম।
কমিউনিজম সরকার তখন ক্ষমতায়। তাদের সিদ্ধান্ত পুঁজিবাদ অবসান হবে এবং তা বিলিয়ে দিতে হবে সাধারণ লোকের মাঝে। ফলে হোটেল ডিটেই আর ডিটেই-এর থাকে না। উপরন্তু পনের কোটি অর্থ থাকার অপরাধে ডিটেই-এর পনের বছর জেল হয়।
জেলে ডিটেই দেখে আরো অনেক কোটিপতি নালিশ জানানোর সুযোগ না পেয়ে বালিশ বানানোর জন্য তুলো ঘাটছে। পনের বছর জেল খেটে আজ ডিটেই তার স্বগৃহে ছোট একটা দোকান দিয়েছে। প্রথম কাস্টমার সেই মি. ওয়ালডেনের কাছে বিয়ার বিক্রি বাবদ দাম রেখে খুচরা ফেরত দেয়। পুরস্কারের মেডেলটা পরিয়ে দেয় ডিটেই ছাগলের গলায়। সব রকম পাশমুক্ত হয়ে বুকভরে বাতাস নেয় ডিটেই, মোহ থেকে মুক্তি ঘটে ডিটেই-এর। আর সেখানেই শেষ হয় ‘আই সার্ভ দা কিং অব ইংল্যান্ড’।
আরও দেখুনঃ